নাবিক পেশায় প্রথমবারের মতো ১৩ বাংলাদেশি নারী
অনলাইন
মুক্তআলো২৪.কম
প্রকাশিত : ০৬:৩৮ এএম, ১০ আগস্ট ২০১৪ রোববার | আপডেট: ০৮:২৫ পিএম, ৩১ আগস্ট ২০১৪ রোববার
বাংলাদেশের নারীরা বাণিজ্যিক জাহাজে নাবিক হিসেবে কাজ শুরু করবেন চলতি মাসেই । এর আগে বিমানের পাইলট, পুলিশ ও সশস্ত্রবাহিনীতে নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হলেও বাণিজ্যিক জাহাজে নারী নাবিকের কাজ বাংলাদেশে এই প্রথম। খবর ডয়চে ভেলের।
প্রথম ব্যাচে মোট ১৩ জন নাবিক যোগ দিচ্ছেন বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের বিভিন্ন জাহাজে। গত ডিসেম্বরে তাঁরা বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি থেকে ক্যাডেট হিসেবে তাদের প্রশিক্ষণ শেষ করেছেন। তারা জাহাজে মেরিন অফিসার হিসেবে যোগ দিচ্ছেন।
বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমোডর মকসুমুল কাদের ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘বাণিজ্যিক জাহাজে নারীদের মেরিন অফিসার হিসেবে চাকরি বাংলাদেশে নতুন এক ইতিহাস। বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের প্রতিটি জাহাজে দু`জন করে নারী মেরিন অফিসার নিয়োগ দেয়া প্রক্রিয়া শুরু করেছে। মেরিন একাডেমি থেকে প্রশিক্ষণ শেষ করে ১৩ জন নারী মেরিন ক্যাডেট জাহাজে চাকরির জন্য আবেদন করেছেন। তাদের আবেদন বিবেচনা করা হচ্ছে।`` তিনি জানান, তাদের নিয়োগ চূড়ান্ত হতে আরো এক বছর লাগবে। এখন তাঁরা ক্যাডেট হিসেবে শিপিং কর্পোরেশনে যোগ দিয়ে এক বছরের প্রশিক্ষণ নেবেন। তারপর বিভিন্ন জাহাজে তাদের নিয়োগ দেয়া হবে।
জানা গেছে, সমুদ্রগামী জাহাজে নাবিক পদে বিশ্বের প্রথম নারী হিসেবে ১৯৪৫ সালে যোগ দিয়েছিলেন সুইডিশ এক নারী। পরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নারীরা অফিসার পদে যোগ দিলেও এত দিন বাংলাদেশি নারীদের কোনো সুযোগ ছিল না।
মেরিন প্রশিক্ষণে নারী ক্যাডেট সংখ্যা বাড়ানোর জন্য ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অরগানাইজেশন (আইএমও) নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করায় ২০১২ সালে মেরিন প্রশিক্ষণ শুরু হয়। গত ডিসেম্বরে বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি থেকে নটিক্যাল ও ইঞ্জিনিয়ারিং দুই শাখায় মোট ১৩ জন নারী ক্যাডেট প্রশিক্ষণ শেষ করেন। আর বর্তমানে দ্বিতীয় ব্যাচে তিনজন নারী ক্যাডেট রয়েছেন।
বাংলাদেশ মেরিন একাডেমির কমান্ড্যান্ট ড. সাজিদ হোসাইন বলেন, ‘‘বিভিন্ন বাধা-বিঘ্ন অতিক্রম করে এ দেশে প্রথমবারের মতো নারী মেরিন অফিসার সমুদ্রগামী জাহাজে যোগ দিতে যাচ্ছেন। বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন এসব নারী মেরিন অফিসারকে চাকরির সুযোগ করে দিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করল।``
জাহাজে নারীদের চাকরির সুযোগ প্রসঙ্গে ভারতের উদাহরণ দিয়ে ড. সাজিদ বলেন, ‘‘এই পেশায় নারীদের উৎসাহিত করতে ভারত নারীদের জন্য প্রশিক্ষণ ফি ৫০ ভাগ কমিয়েছে আর বয়স দুই বছর শিথিল করেছে। ফলে ভারতে ক্ষেত্রে নারী ক্যাডেটের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।`` তিনি জানান, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নারী নাবিকরা আগে থেকেই কাজ করছেন। এবার বাংলাদেশও সেই তালিকায় স্থান করে নিচ্ছে।
এদিকে নারী নেত্রী অ্যাডভোকেট এলিনা খান নাবিক পেশায় প্রথম যোগ দিতে যাওয়া নারীদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেছেন, ‘‘তাদের দেখে বাংলাদেশের নারীরা আরো এগিয়ে যাবে।`` তবে তিনি মনে করেন, তাদের নিরাপত্তার বিষয়ে শিপিং করপোরেশনসহ সরকারকে খেয়াল রাখতে হবে। তৈরি করতে হবে প্রয়োজনীয় নীতিমালা। আর কর্মক্ষেত্রে তারা যেন জেন্ডার বৈষম্যের শিকার না হন। আর নারী নাবিকদেরও মনে রাখতে হবে তারা নাবিক।