`একটি পতাকার জন্ম`
প্রবাসী চিত্র নির্মাতা প্রকাশ রায় পরিচালিত
ফ্রান্সের বিশেষ সংবাদদাতা `দোলন মাহমুদ`
মুক্তআলো২৪.কম
প্রকাশিত : ০১:০৭ পিএম, ৩ জুন ২০১৪ মঙ্গলবার | আপডেট: ০৬:৪২ পিএম, ১৯ জুন ২০১৪ বৃহস্পতিবার
গত রোববার ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে একটি সিনেমা হলে এ তথ্যচিত্রটি প্রদর্শিত হয়। ফ্রান্স প্রবাসী চিত্র নির্মাতা প্রকাশ রায় পরিচালিত "একটি পতাকার জন্ম" শীর্ষক এ তথ্য চিত্রটির প্রদর্শনীতে মুক্তিযুদ্ধকালীন ফরাসী সাংবাদিক ফিলিপ আলফান্সো সহ শতাধিক দেশী-বিদেশী দর্শক উপস্থিত ছিলেন। যে ভাবে বললেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালীন সংবাদ সংগ্রহে অবদান রাখা ফরাসী ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক ফিলিপ আলফান্সো। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারত ও রাশিয়ার যৌথ আক্রমনের সংবাদ সংগ্রহের জন্যই ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে যাই। সেখানে আমরাই প্রথম বিদেশী সাংবাদিক হিসেবে গিয়েছিলাম। সে সময় আমি স্বচক্ষে দেখেছি নীরিহ বাংলাদেশী জনগণের ওপর হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর নির্মমতা। যুদ্ধকালীন অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে জানতে পারি এটি বাংলাদেশের মুক্তিকামী জনতার স্বাধীনতার সংগ্রাম। যুদ্ধের ৪২ বছর পর নিজের সংগৃহীত ভিডিও ফুটেজের ওপর ভিত্তি করে নির্মিত এ তথ্যচিত্র দেখে আমি মুগ্ধ। যুদ্ধকালীন সময়ের স্মৃতি রোমন্থন করে ফিলিপ বলেন, সে সময় আমি পাকিস্তানে সংবাদ সংগ্রহের জন্য গিয়েছিলাম। লাহোরে অবস্থান করার পর খবর পাই তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে কমিউনিস্টদের সহায়তা করছে ভারত ও রাশিয়ার যৌথ বাহিনী। কমিউনিস্টদের দমনের জন্য পাকিস্তান সরকার যুদ্ধ পরিচালনা করছে। সে খবরের ভিত্তিতে ১৯৭১ সালের এপ্রিল মাসের সম্ভবত ৬ তারিখে আমরা ভারত হয়ে পূর্ব পাকিস্তানে প্রবেশ করি। সেখানে প্রবেশ করার পরই যুদ্ধের ভয়াবহতা নজরে আসে। বিদ্রোহী দমনের নামে পাকিস্তানি বাহিনী নীরিহ জনগণের ওপর অমানুষিক অত্যাচার করে। যা আমরা আমাদের ক্যামেরায় ধারন করি। সেখানে কিছুদিন অবস্থান করার পর আমরা আবার লাহোর ফিরে যাই। সেখানেই আমরা বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার সংবাদ পাই। স্বাধীন একটি দেশের মুক্তিযুদ্ধকালীন ঘটনার স্বাক্ষী হতে পেরে আমি গর্বিত। তথ্যচিত্রটির পরিচালক প্রকাশ রায় এটি নির্মাণ প্রসঙ্গে জানান, উদ্বাস্তুদের জীবন সংগ্রাম নিয়ে একটি শর্ট ফিল্ম বানানোর জন্য ফ্রান্সের জাতীয় ফিল্ম ইন্সটিটিউটের আর্কাইভে গিয়েছিলাম। সেখানে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ের কিছু ফুটেজ পাই। ফুটেজগুলো পাবার পর দেশপ্রেমের তাগিদে "একটি পতাকার জন্ম" বানানোর সিদ্ধান্ত নেই। কারা এ ফুটেজ তুলেছিলো শুরু করি অনুসন্ধান। এক সময় পেয়ে যাই ফিলিপের সন্ধান। তারপর যোগাযোগ করি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হকের সঙ্গে। উনার সহযোগিতায় নির্মাণ কাজ শুরু করি। একঘন্টা ব্যাপ্তির এ তথ্যচিত্রটির নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় তের হাজার ইউরো। যার মধ্যে নির্মাতা প্রায় দুই হাজার ইউরো, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর কর্তৃপক্ষ চার হাজার ইউরো এবং ফ্রান্স প্রবাসী বাংলাদেশী ব্যবসায়ী কাজী এনায়েত উল্লা সাত হাজার ইউরো দিয়েছেন বলে জানান এ নির্মাতা।