ঢাকা, ২১ নভেম্বর, ২০২৪ || ৭ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
Breaking:
সশস্ত্র বাহিনী দিবস: শিখা অনির্বাণে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা     
Mukto Alo24 :: মুক্ত আলোর পথে সত্যের সন্ধানে
সর্বশেষ:
  বাংলাদেশ ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে চায় : প্রধান উপদেষ্টা        জঞ্জাল পরিষ্কার করে দ্রুত নির্বাচন দিন : মির্জা ফখরুল        শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা বিকাশে সহায়ক শিক্ষাব্যবস্থা দরকার : ড. মুহাম্মদ ইউনূস     
২২০৭

মোদি সরকার কেমন হবে

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৬ মে ২০১৪   আপডেট: ২৩ মে ২০১৪

কেমনই বা হবে তাঁর নেতৃত্বাধীন সরকার—এসব জল্পনা অনেক দিনের, অচিরেই যার অবসান ঘটতে যাচ্ছে।ভারতের নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কেমন হবেন নরেন্দ্র দামোদারদাস মোদি, এরই মধ্যে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (এনডিএ) লোকসভার ৫৪৩টি আসনের মধ্যে ৩৩৯টি নিশ্চিত করেছে। আগামীকাল শনিবার পদত্যাগ করবেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। ২১ মে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিতে পারেন নরেন্দ্র মোদি।নরেন্দ্র মোদি ও তাঁর দলের সাম্প্রদায়িক মনোভাব, হিন্দুত্ববাদী সংগঠন আরএসএসের সঙ্গে বিজেপির ঘনিষ্ঠতা, ২০০২ সালে গুজরাটের দাঙ্গায় মোদির ভূমিকা—ইত্যাদি কারণে কিছুটা শঙ্কিত আন্তর্জাতিক অঙ্গন, বিশেষত দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো। অনেকের আশঙ্কা, মোদি ক্ষমতায় গেলে ভারতে সাম্প্রদায়িক অস্থিরতা বাড়বে। এ ছাড়া পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে নরেন্দ্র মোদি কঠোর অবস্থান নিতে পারেন বলে অনেকের ধারণা।তবে মোদির এই ‘ইমেজ’ তেমন প্রভাব ফেলতে পারেনি ভারতীয় ভোটারদের মনে। কংগ্রেসের লুটপাট, দুর্নীতি এবং তাদের আমলে অর্থনৈতিক উন্নয়নের ধীরগতি ফলে সৃষ্ট অবস্থায় অতিষ্ঠ অধিকাংশ ভারতীয় নাগরিকের প্রত্যাশা, গুজরাটের মতো গোটা ভারতকেই অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী করে তুলতে সমর্থ হবেন মোদি।

ভারতের ইন্টারনেটভিত্তিক নেটওয়ার্ক টাইমস ইন্টারনেট লিমিটেডের প্রধান সম্পাদক (চিফ এডিটর) রাজেশ কার্লার মতে, দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রীকে বেশ কয়েকটি বিষয়ের দিকে মনোযোগ দিতে হবে। এগুলো হলো, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, দুর্নীতি প্রতিরোধ, মানবসম্পদ উন্নয়ন, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতের উন্নয়ন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নকে আরও সমৃদ্ধ করা, তরুণদের ক্ষমতায়ন, আইনভঙ্গকারী মন্ত্রী ও সরকারি কর্মকর্তাদের শাস্তি প্রদান,  কোনো বিশেষ ধর্মীয় গোষ্ঠীকে প্রাধান্য দিয়ে সাম্প্রদায়িক চেতনা উসকে না দেওয়া, নদ-নদী পুনরুদ্ধার ইত্যাদি। ভারতের জনগণের এ সুবিশাল প্রত্যাশার চাপ মাথায় নিয়েই সরকার গঠন করতে যাচ্ছেন নরেন্দ্র মোদি।বিজেপি এরই মধ্যে ঘোষণা দিয়েছে, ভারতে নতুন যুগের সূচনা হয়েছে। দলটি তাঁদের নির্বাচনী ইশতেহারে মুদ্রাস্ফীতি রোধ এবং দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। দলটি ভারতের অর্থনৈতিক মন্দার জন্য সংযুক্ত প্রগতিশীল মোর্চার পরিকল্পনা ও সিদ্ধান্ত প্রণয়নের অসাড়তাকে দায়ী করেছে। তবে বর্তমান অবস্থা থেকে উত্তরণের কোনো সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ প্রস্তাব করেনি তারা। গুজরাটের অর্থনীতির চেহারা পাল্টে দেওয়ার ক্ষেত্রে মোদির ভূমিকা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। তবে ভারতের সার্বিক অর্থনীতির চেহারা কতটা পাল্টাতে পারবেন, মোদি সরকারের সামনে এখন এটিই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।ভারতের জনগণের বিপুল প্রত্যাশা পূরণের এ দায় কাঁধে তুলে নিতে চাইলে মোদিকে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে হবে। এ জন্য তাঁকে রাজনৈতিক সংঘাতে না জড়িয়ে প্রতিবেশীদের প্রতি অবশ্যই সহযোগিতামূলক মনোভাব পোষণ করতে হবে। তবে এ বিষয়ে মোদি আন্তরিক হবেন কি না, তা নিয়ে প্রতিবেশী দেশগুলোর যথেষ্ট সংশয় রয়েছে।সীমান্তে বিএসএফের নির্বিচারে হত্যা, যৌথ নদীর পানির ন্যায্য হিস্যাসহ বিভিন্ন বিষয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের আগে থেকেই নানা অমীমাংসিত দ্বন্দ্ব রয়েছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে ভারতে অবৈধভাবে বসবাসরত বাংলাদেশিদের বিষয়টি। মোদি বেশ কিছু নির্বাচনী জনসভায় ঘোষণা দিয়েছেন, বিজেপি ক্ষমতায় গেলে ভারতে অবৈধভাবে বসবাসরত বাংলাদেশিদের দেশে ফেরত পাঠাবেন। মোদির এমন মনোভাবের ফলে বাংলাদেশের সঙ্গে অমীমাংসিত সংকট সমাধানে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকার সদিচ্ছা দেখাবে বলে আশা করা যাচ্ছে না।চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের সীমান্ত বিরোধ ও জঙ্গি ইস্যু নিয়ে বিরোধ রয়েছে। পাকিস্তানি জঙ্গিদের ভারতের ভূখণ্ডে আক্রমণের ঘটনায় কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন সংযুক্ত প্রগতিশীল মোর্চা সরকার ‘নমনীয়’ ভূমিকা রেখেছে বলে কঠোর সমালোচনা করেছেন নরেন্দ্র মোদি। তাই সীমান্ত ইস্যুতে পাকিস্তান ও চীনের প্রতি মোদি কঠোর নীতিই নেবেন বলে আশঙ্কা রয়েছে।পৃথিবীর সবচেয়ে পরাক্রমশালী দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের সম্পর্ক তুলনামূলক কিছুটা শীতল। এ ছাড়া ‘দাঙ্গাবাজ’ হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার কারণে মোদির প্রতি বরাবরই বিরূপ মনোভাব পোষণ করে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রে মোদির প্রবেশে এত দিন নিষেধাজ্ঞা ছিল। তাঁকে মার্কিন ভিসা দেওয়া হয় না।ভারতের পররাষ্ট্র দপ্তরের সাবেক কূটনীতিক টি পি শ্রীনিবাসনের মতে, দেশের অর্থনৈতিক উন্নতির ওপর গুরুত্বারোপ করতে চাইলে মোদিকে ধনী দেশগুলোর প্রতি ‘নমনীয় নীতি’ গ্রহণ করতে হবে। এর প্রাথমিক ধাপ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে মনোযোগী হতে হবে তাঁকে। শ্রীনিবাসন আশা প্রকাশ করে বলেন, আগের সব বিদ্বেষ ভুলে যুক্তরাষ্ট্র ও নরেন্দ্র মোদি ব্যবসায়িক স্বার্থকেই প্রাধান্য দেবেন এবং এ লক্ষ্যে যৌথভাবে কাজ করবেন।ফরেন অ্যাফেয়ার্স সাময়িকীতে সম্প্রতি প্রকাশিত প্রতিবেদনে লেখক মঞ্জরি চ্যাটার্জি মিলার মন্তব্য করেছেন, নরেন্দ্র মোদির প্রধানমন্ত্রিত্ব গ্রহণের মধ্য দিয়ে ভারতের পররাষ্ট্রনীতি রাতারাতি নাটকীয়ভাবে পাল্টে যাবে, এমন ধারণা ঠিক না। তিনি বলেন, গত পাঁচ দশকে ভারতে যেসব দল বা জোট সরকার গঠন করেছে, তাদের আমলে দেশটির আগের সরকারগুলোর পররাষ্ট্রনীতি খুব একটা পাল্টায়নি বরং সেগুলোরই ধারাবাহিকতা রক্ষা করা হয়েছে।

 

 

 

 

আরও পড়ুন
আন্তর্জাতিক বিভাগের সর্বাধিক পঠিত