ঢাকা, ০৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ || ২৩ ভাদ্র ১৪৩১
Breaking:
কেন্দ্রীয় ছাত্রদল নেতৃবৃন্দের আবু সাঈদের কবর জিয়ারত     
Mukto Alo24 :: মুক্ত আলোর পথে সত্যের সন্ধানে
সর্বশেষ:
  দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা        ক্ষমা পাওয়া ১৪ বাংলাদেশি আজ আমিরাত থেকে দেশে ফিরছেন        গণভবন পরিদর্শনে তিন উপদেষ্টা        গণ-আন্দোলনে আহতদের দেখতে নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালে ড. ইউনূস     
২৫৩৪

সন্তুষ্ট মার্কিন জোট পোশাক কারখানা পরিদর্শন করে

মুক্তআলো২৪.কম অনলাইন

প্রকাশিত: ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৪   আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪

গত এক বছর কারখানা পরিদর্শন করে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ক্রেতাদের সমন্বয়ে গঠিত পোশাক কারখানা পরিদর্শন জোট অ্যালায়েন্স ।পোশাক খাতের উন্নয়নে সংস্থাটি এই কার্যক্রম চালিয়ে যাবে বলে জানিয়েছে। অ্যালায়েন্সের পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে এই কথা জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে অ্যালায়েন্সের এক বছরের কার্যক্রমের পর্যালোচনা নিয়ে সম্প্রতি একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে অ্যালায়েন্সের প্রধান এবং যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক কংগ্রেস সদস্য অ্যালেন টসার বাংলাদেশের গার্মেন্ট খাতের উন্নয়নে অ্যালায়েন্স গঠনের পটভূমি তুলে ধরেন। এ সময় যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটর জর্জ মিশেল, যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং বাংলাদেশের শ্রমিক নেতাদের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে অ্যালেন টসার বিভিন্ন পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলেন, গত এক বছরে এই জোটের কার্যক্রমে তাৎপর্যপূর্ণ অগ্রগতি হয়েছে। তাদের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী, শতভাগ কারখানা (৫৮৭টি-সবগুলো) ইতিমধ্যে পরিদর্শন সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে অর্ধেক কারখানার সংস্কার কার্যক্রম ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। পরিদর্শনের সময় ঝুঁকি বিবেচনায় ১৪টি কারখানা আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বন্ধ হওয়া কারখানার শ্রমিকদের বেতনের অর্ধেক অংশ অ্যালায়েন্স পরিশোধ করেছে।

**রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মহলের সমালোচনার প্রেক্ষিতে অ্যামেরিকাভিত্তিক ২৬টি ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে গঠিত হয় অ্যালায়েন্স ফর বাংলাদেশ ওয়ার্কার সেফটি- সংক্ষেপে যেটা অ্যালায়েন্স নামে পরিচিত। জোট গঠিত হওয়ার এক বছরের মধ্যে জোটের সদস্যদের অর্ডার সরবরাহ করে এমন বাংলাদেশি কারখানা পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত হয়। সেই সঙ্গে ঝুঁকির মাত্রা বিবেচনায় ৫ বছরের জন্য কারখানা সংস্কারে একটি তহবিলও গঠন করা হয়। অ্যালায়েন্সের পাশাপাশি অ্যাকর্ড নামে ইউরোপভিত্তিক ক্রেতাদের সমন্বয়ে গঠিত আরেকটি জোটও কারখানা পরিদর্শন কার্যক্রম চলমান রেখেছে।
অ্যালায়েন্সের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শ্রমিকদের নিরাপত্তার জন্য শুরুতেই প্রতিষ্ঠানগুলো ৫ কোটি মার্কিন ডলারের তহবিল গঠন করেছিল। এর বাইরে কারখানা ভবন সংস্কারে আরো ১০ কোটি ডলার স্বল্প সুদে ঋণ তহবিল এবং সম্প্রতি আরো কয়েকটি কম্পানি মিলে আরো ২ কোটি ডলারের তহবিল গঠন করেছে। এই তহবিল থেকে আগামী ৫ বছর কারখানা ভবন সংস্কারে উদ্যোক্তাদের স্বল্প সুদে ঋণ দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।

**পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর তথ্য মতে, সাব-কন্ট্রাক্টিং করে এমন কারখানাগুলো ক্রমেই বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। আসছে ঈদের পরও এমন অনেকগুলো কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। গত বছর রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির পর প্রায় ৪ শতাধিক ছোট গার্মেন্ট কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। তবে গার্মেন্ট কারখানা বন্ধের বিষয়ে কমপ্লায়েন্স ইস্যুর চেয়ে মালিকরা বাড়তি উৎপাদন খরচ এবং পোশাকের দাম বৃদ্ধি না হওয়ার কারণকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। তাঁদের মতে, কমপ্লায়েন্স করতে যেমন খরচ বাড়ে, তেমনি বর্ধিত মজুরি প্রদান এবং প্রতিযোগিতামূলক বাজার ধরতে গিয়ে টিকে থাকাই কষ্টকর হয়ে পড়েছে। যে কারণে মালিকদের অনেকেই এদিকে নজর দিচ্ছে না। ফলে স্বল্প পুঁজি ও ছোট পরিসরে গড়ে উঠা কারখানাগুলো প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারছে না।
বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ-র এক হিসাবে দেখা গেছে, ২০১৩ সালে বন্ধ হয়ে যাওয়া বেশির ভাগ কারখানাই শেয়ারড ভবনে (গার্মেন্ট কারখানার পাশাপাশি অন্য কার্যক্রমও চলে এমন ভবন) এবং সাব-কন্ট্রাক্ট ভিত্তিতে কাজ করত। কিন্তু বন্ধ হওয়া এসব কারখানার শ্রমিকদের বেতন-ভাতাদি অপরিশোধিতই রয়ে যাচ্ছে। বিজিএমইএ-র হিসাবে রানা প্লাজা দুর্ঘটনাপরবর্তী সময়ে ২০৯টি কারখানা বন্ধ হয়েছে। এর বাইরে বিকেএমইএ-র সদস্যভুক্ত কারখানাগুলোর মধ্য থেকে আরো ১৯৩টি কারখানা বন্ধ হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংগঠনের কর্মকর্তারা।

**সম্প্রতি আশুলিয়ার জামগড়া এলাকার সোনিয়া ফাইন নিট নামে একটি কারখানার শতাধিক শ্রমিক রাজধানীর বিজিএমইএ ভবনের সামনে পাওনা পরিশোধের দাবিতে বিক্ষোভ করেন। কারখানার মালিক এনায়েত উদ্দিন মাহমুদ কায়সার বলেন, আইন মেনেই ওই কারখানা লে-অফ ঘোষণা করা হয়েছে। শ্রমিক এবং ট্রেড ইউনিয়নের নেতারা অন্যায্যভাবে পিস রেট বাড়ানোর দাবি করছিল। কারখানা চালু রাখার বিষয়ে তাদের বিন্দুমাত্র সহানুভূতি নেই। শেষ পর্যায়ে অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, শ্রমিকরা সকালে এসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে চলে যাবে আর মাস শেষে তাদের বেতন দিতে হবে। এভাবে তো আর কারখানা চালু রাখা যায় না।
সূত্র : ডয়চে ভেলে

আরও পড়ুন
অর্থ ও বাণিজ্য বিভাগের সর্বাধিক পঠিত